ডেক্স রিপোর্টঃ২৮ সেপ্টেম্বর

মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার চাঞ্চল্যকর শহিদুল ইসলাম’কে নৃশংসভাবে গলাকেটে হত্যা মামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ শাহিন আলম (৩৮)’কে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪

র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ রাতে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার বড়টিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার চাঞ্চল্যকর শহিদুল ইসলাম’কে নৃশংসভাবে গলাকেটে হত্যা মামলার প্রধান আসামী এবং দীর্ঘ ০৬ বছর বিভিন্ন ছদ্মবেশে পলাতক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী *মোঃ শাহিন আলম (৩৮)*, জেলা-ঢাকা’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

ঘটনার বিবরণঃ* গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ভিকটিম শহিদুল টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানাধীন বানিয়াপাড়া এবং গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ শাহিন আলম ঢাকা জেলার ধামরাই জেলার গোয়ারীপাড়া এলাকার বাসিন্দা হলেও গত ২০০১ সাল হতে আশুলিয়ার একটি গার্মেন্টেসে চাকুরী করার সুবাদে ভিকটিম ও গ্রেফতারকৃত আসামীর মাঝে সখ্যতা গড়ে উঠে। গ্রেফতারকৃত আসামী শাহিন আলম ভিকটিমকে এনজিও প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব দিলে ভিকটিম শহিদুল ইসলাম পূর্বে এনজিওতে কাজ করার অভিজ্ঞতার বিষয় জানানোর পাশাপাশি এনজিও প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ সহযোগীতা করার আশ্বাস দেয়। এই পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২০০৪ সাল হতে প্রাথমিকভাবে ঢাকা জেলার ধামরাই থানাধীন গোয়াড়ীপাড়ায় একটি অফিস ভাড়া নিয়ে “বাংলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা” নামক একটি সঞ্চয় ও ক্ষুদ্র ঋণদান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে এবং ভিকটিম বেশ কিছু অর্থ ঋণ দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ২০০৫ সাল হতে তারা গার্মেন্টেসের চাকুরী ছেড়ে দিয়ে এনজিও কার্যক্রমে পূর্ন মনোনিবেশ করে। উক্ত এনজিওতে দুজনেই সমান অংশীদারী ছিলেন। এনজিও প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তারা ০২ জন মহিলা কর্মী নিয়োগ দিয়ে ধামরাই এলাকায় ০৪ টি প্রোগ্রামে ৪৫০ জন সদস্য সংগ্রহপূর্বক সঞ্চয়, ঋণদান এবং ফিক্সড ডিপোজিট কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো এবং ঘটনার সময় পর্যন্ত এনজিওটি আনুমানিক ০৯/১০ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করেছিলো। গ্রেফতারকৃত আসামী শাহিন ও ভিকটিম শহিদুল সমান অংশীদার থাকলেও ভিকটিম শহিদুল এনজিওটির কর্মচারী এবং সদস্যদের কাছে তার কর্মদক্ষতা ও ভালো ব্যবহারের জন্য খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। তাদের প্রতিষ্ঠিত এনজিও ব্যবসায় লাভের পরিমাণ ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিলো এবং একসময় তাদের একাউন্টে সদস্যদের সঞ্চয়ের বেশকিছু টাকা জমা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী শাহিন একজন লোভী প্রকৃতির মানুষ হওয়ায় ভিকটিমের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হতে থাকে এবং এনজিও এর সকল লভ্যাংশ নিজের করার জন্য প্রতিষ্ঠানটির পূর্ণ মালিকানা সম্পূর্ণ নিজের করে নেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে এবং মনে মনে ফন্দি আঁটে। একপর্যায়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধৃত আসামী শাহীন এনজিও পরিচালনার বিভিন্ন কার্যক্রমে ভিকটিমের সাথে ইচ্ছাকৃত মনোমালিন্যের সৃষ্টি করে এবং আসামী ভিকটিমকে কিছু টাকার প্রস্তাব দিয়ে এনজিওটি নিজের করে নিতে চায় কিন্তু ভিকটিম তাতে রাজি হয়নি। ফলশ্রুতিতে আসামী শাহিন ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আসামী শাহিন ভিকটিমের সহিত পূনরায় পূর্বের ন্যায় সখ্যতা তৈরি করে। ঘটনার ২০/২৫ দিন পূর্বে আসামী শাহিন তার মামাতো ভাই টাঙ্গাইলের সন্ত্রাসী রাজা মিয়া’কে নিয়ে ভিকটিমকে হত্যার পূর্ণ ছক আঁকে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন গত ২০ মে ২০০৬ তারিখ দুপুরের পর থেকেই আসামী শাহীন অফিসে বিভিন্ন কাজে ইচ্ছাপূর্বক কালক্ষেপণ করে এবং একপর্যায়ে আসামী নিজের জন্য পাত্রীর দেখতে যাওয়ার জন্য ভিকটিমকে প্রস্তাব দেয় ও জানায় টাঙ্গাইল থেকে তার মামতো ভাই ও তার বন্ধুরা আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *