মো.রকিবুল হাসান বিশ্বাস,সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)থেকে:
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের মুন্সিনগর মৌজায় বন্দোবস্ত নেয়া খালের জায়গায় বহুতল ভবনসহ একাধিক স্থাপনা নির্মাণের কাজ কোনোভাবেই থামছে না। বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে কিঞ্চিত টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। গণমাধ্যমে স্বচিত্র সংবাদ প্রকাশের পর ইউনিয়ন সহকারি (ভূমি) কর্মকর্তা মো. কুদ্দুছুর রহমান স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। তার একদিন পর থেকেই পুরোদমে চলছে কর্মযজ্ঞ। নির্মাণকাজে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
সূত্র মতে, উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের মুন্সিনগর মৌজায় নকশা-পর্চায় খাল থাকলেও নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে দেয়া হয়েছে বন্দোবস্ত। আর সেই জমিতেই নির্মাণ করা হচ্ছে একাধিক পাকা স্থাপনাসহ পাঁচতলা ভবন । স্থানীয় জনৈক বাবুল হোসেন স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে দৃশ্যমান ঘটনাটি তুলে ধরে আদালতে মামলাসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করলেও নেয়া হচ্ছে না কোনো আইনগত ব্যবস্থা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রামনগর বাজার সংলগ্ন মুন্সিনগর মৌজায় আরএস ১৩৬ নং দাগে নকশায় দৃশ্যায়িত রয়েছে খাল। ওই খালকে নাল দেখিয়ে ১৯৮৭ সালে আইনুদ্দিন চৌকিদার ও খালেক চৌকিদারের নামে ৯০ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত দেন সরকার। ওই জায়গার খালেক চৌকিদার ৫০ শতাংশের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ না করলেও আইনুদ্দিন চৌকিদারের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশানগণ ৪০ শতাংশ জমিতে খাল ভরাটের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
সম্প্রতি আইনুদ্দিনের অংশে মেয়ে সখিনা ও চাম্পা, ছেলে আমজাদ খাঁ মাটি ভরাট করে দোকানপাট নির্মাণ সম্পন্ন করেছেন। পাশাপাশি, নাতি কাউছারের পাঁচতলা ভবনের নির্মাণ কাজও চলছে পুরোদমে। নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের সামনে ব্যাংক-বীমা ভাড়ার জন্য সাঁটানো হয়েছে ব্যানার। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের চোখের সামনে শ্রেনীভুক্ত খালের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে জনমনে চলছে নানা কানাঘষা।
অভিযোকারী মো. বাবুল হোসেন বলেন, আমি ডিসি স্যারের কাছে গিয়েছিলাম। স্যার আমার সামনে এসিল্যান্ড সাহেবকে ফোন দিয়ে কাজ বন্ধ করার কথা বললেও নির্মাণ কাজ বন্ধ হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, অভিযোগ দায়েরের পর কাউছার গং আমার অটো রিকসাটিও চুরি করে নিয়ে গেছে। তাদের ভয়ে আমি বাড়িতে বসসবাস করতে পারছি না।
এ প্রসঙ্গে ইউনিয়ন সহকারি (ভূমি) কর্মকর্তা মো. কুদ্দুছুর রহমান বলেন, আমি স্থাপনা নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিলেও শুনেছি আবার কাজ শুরু করেছে। আমি ছোট অফিসার। আপনারা বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন।
সিংগাইর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. মাঈদুল ইসলাম বলেন, জনৈক বাবুল নামের ব্যক্তি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযোগটির প্রেক্ষিতে তদন্ত কাজ চলছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেয়া হবে। সে অনুযায়ী ডিসি স্যারের নির্দেশ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারি স্বার্থ ও নির্মাণ কাজ চলমান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবকিছুই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন,খাল কিভাবে বন্দোবস্ত দেয়া হলো বুঝে আসছে না। পত্রিকার রিপোর্ট দেখে আমি ইউএনও কে প্রতিবেদন দিতে বলেছি। প্রতিবেদন দেখে কাগজপত্র, নকশা-পর্চা পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।