
মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা,২৬ মে।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ) বালিকা মাদ্রাসার ছাত্রী মাহিয়া আক্তারের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করেছে নিহত’র পরিবার ও এলাকাবাসী।
আজ ২৬ মে রোববার নিহত মাদ্রাসা ছাত্রীর এলাকাবাসীর আয়োজনে সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের নবগ্রাম পুর্ব নবগ্রাম এলাকায় এই মানববন্ধন পালিত হয়। এরপর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
এসময় নিহতের মা আইরীন আক্তার, প্রতিবেশি রোমানা বেগম, আব্দুল হালিম, আব্দুর রহমান ও জাহেদা বেগমসহ এলাকাবাসী বক্তব্য রাখেন। এতে কয়েকশ নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
অভিযুক্তরা হলেন,মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম এলাকার বাদল মিয়ার মেয়ে বাবলী আক্তার, ঢাকার ধামরাইয়ের ফরিঙ্গা এলাকার আব্দুল খালেকের মেয়ে মারিয়াম আক্তার এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভুল জয়রা এলাকার মৃত খলিরুর রহমানের ছেলে ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোঃমাইনুদ্দিন।
এজহারপত্রে জানা যায়,পূর্ব শত্রুতার জেরে গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার সকালে খেলার কথা মাহিয়া আক্তারকে কৌলশলে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায় সহপাঠী বাবলী আক্তার ও মারিয়াম আক্তার। এরপর মাহিয়াকে মারধর করে মাদ্রাসার বহুতল ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেয় বাবলী ও মারিয়া আক্তার। পরে গুরুত্ব অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা আংশখ্যাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের রেফার্ড করা হয়। কিন্তু ঢাকায় নেওয়ার পথে মাহিয়া আক্তারের মৃত্যু হয়। পরে এঘটনায় চলিত মাসের ৬মে পুলিশ সুপারের সাহায্যে বাবলী আক্তার, মারিয়াম আক্তার ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাইনুদ্দিনকে আসামী করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন নিহত মাদ্রাসা ছাত্রীর মা আইরীন আক্তার।
নিহতের মা আইরীন আক্তার জানান,মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় দিন মানিকগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয় নি। দীর্ঘদিন থানায় ঘুরেও মামলঅ করতে পারি নাই। এরপর চলিত মাসের ৫ তারিখ পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে পুলিশ মামলা নিয়েছে। কিন্তু মামলার আগে ও পরে মাদ্রাসার শিক্ষকরা বিষয়টি মিমাংসার জন্য ৫ লাখ টাকার অফার দিয়েছে। আমার মেয়েকে হত্যা করেছে, এখন আবার টাকা দিয়ে আপসের চেষ্টা করছে শিক্ষকরা। আমি টাকা দিয়ে কি করবো। আমার মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।
তিনি আরও জানান,পড়া মুখস্ত কম থাকায় মাঝেমধ্যে মাদ্রাসার শিক্ষকরা মাহিয়াকে বকাঝকা ও মারধর করতেন। নির্যাতনের কারনে মাদ্রাসা ছেড়ে চলে যায় মাহিয়া। পরে মাদ্রাসায় শিক্ষদের নির্যাতন না করতে অনুরোধ করে মাহিয়াকে মাদ্রাসায় রেখে বাড়িতে চলে আসি। ওই ঘটনার পর শুক্রবার ছাদে খেলার কথা বলে আমার মেয়েকে ছাদে নিয়ে যাওয়া হয় এবং শিক্ষদের পরামর্শে মাহিয়ার সহপাঠীরা তাকে মারধর করে ছাদ থেকে ফেলে দেয়।
স্থানীয় আব্দুর রহমান জানান,মাহিয়াকে হত্যার পর মাদ্রাসার শিক্ষকরা টাকা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করেছে। আমরা মাহিয়ার হত্যাকারীদের সঠিক বিচার চাই। যাতে আর কোন মাদ্রাসায় এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। সেই মামলার পরও আসামী গ্রেফতার না করায় পুলিশের দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তিনি।
তবে এবিষয়ে অভিযুক্ত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোঃমাইনুদ্দিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয় নি।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.হাবিল হোসেনে জানান, মামলার প্রধান আসামী মোঃমাইনুদ্দিন হাইকোর্টের মাধ্যমে জামিনে আছেন। বাকিরা আসামীরা পলতাক রয়েছে। তাদেরকে ধরতে পুলিশ কাজ করছে।