মানিকগঞ্জ 4 মার্চ
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশকে স্বাধীন করেছিল। তাদের জীবদ্দশায় এই দেশ আবার পরাজিত শক্তির হাতে চলে যাবে। সেটা হতে পারে না। আগামী নির্বাচনে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যানগার্ড হয়ে কাজ করতে হবে। যাতে এই সরকার ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে ঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা কায়েম করতে পারে। মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর সারা দেশে তাদের কবর একই ডিজাইনে করা হবে। যাতে করে একশ বছর পরও মানুষ চিনকে পারে এটা মুক্তিযোদ্ধাদের কবর।
গতকাল শনিবার মানিকগঞ্জে শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে মুন্সীগঞ্জসহ ঢাকা জেলা পশ্চিম অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপ¯ি’ত থেকে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মিলনমেলায় ঢাকা ২০ আসনের সাংসদ বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে এ সময় উপ¯ি’ত ছিলেন স্বা¯’্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলম দস্তগীর গাজী, দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুল রহমান, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা জামাল মহিউদ্দিন, আ”লীগৈর প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ্য শাহাজাহান খান, মানিকগঞ্জ ১ আসনের সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয়,কন্ঠ শিল্পী মমতাজ বেগম এমপি প্রমুখ।
মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বিএনপি র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম খালেদা জিয়াকে দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং তারেক জিয়া শিশু মুক্তিযোদ্ধা দাবী করেছেন। এই মিথ্যাচার করে তারা নিজেদের দোষ ঢাকতে চায় ।জিয়াউর রহমান মুজিব সরকারের আওতায় যুদ্ধ করতে চাননি। তখন তাকে সাময়িকভাবে বরখান্ত করা হয়েছে।পরে ক্ষমা চাওয়ায় সেক্টর কমান্ডার করা হয়েছিল।পাকিস্তানের সঙ্গে আঁতাত করে খুনি মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিলেন।তারা এখনো বসে নেই। দেশ নিয় এখনও তারানানা যড়যন্ত্র করছে। তাদের রুখতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়া নয় মাস ক্যান্টনমেন্টে হেফাজতে ছিলেন। দুই শ্রেণির নারীরা ক্যান্টনমেন্টে ছিল।এক ধরনের নারীদের সেখানে জোর করে ধরে এনে অত্যাচার করা হয়েছে। আর কেউ কেউ স্বে”ছায় এসে পাক বাহিনীদের সঙ্গ দিয়েছে। ক্যান্টনমেন্টে ইফতেখার খান জানজুয়ার কেয়ারে ছিলেন বেগম খালেদা। জানজুয়া যখন মারা যান খালেদা জিয়া তখন প্রধানমন্ত্রী। সমস্ত প্রকার রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ভঙ্গ করে বেগম জিয়া পাকিস্তানি দূতাবাসে গিয়ে নিজ হাতে শোকবার্তা লিখেছেন। এর চেয়ে লজ্জা আর কলঙ্ক আর হতে পারে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন,আগামী ২৬ মার্চ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ডিজিটাল পরিচয়পত্র ও সনদ তুলে দেওয়া হবে। আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে সব মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়পত্র ও সনদ পাবেন। প্রতিটি ডিজিটাল কার্ডে ৮ ধরনের বারকোড দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেটা মেশিনের ধরা হলে জাতীয় সঙ্গীত, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, কিভাবে মুক্তিযোদ্ধারা প্রশিক্ষণ দিয়েছে অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধাদের যাবতীয় তথ্য থাকবে ওই ডিজিটাল কার্ডে। যাতে কেউ সহজে নকল করতে না পারে। ইতিমধ্যে ৩০ হাজার অসহায় মুক্তিযোদ্ধাকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সকল স্মৃতি রক্ষা করা হবে। বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা চলছে।বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কুৎসা রটিয়ে বিতর্কিত করার চেষ্টা হয়েছে। শত শত মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। এখনো মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা বসে নেই।
আয়োজকরা জানান, ১৯৭১ সালে ২নং সেক্টরের ঢাকা পশ্চিমাঞ্চলে ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলার ২১ উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্য দিন দিন কমে যা”েছ। এ কারণে মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মিলনমেলার আয়োজন করা হয়।