মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ ২৩ আগস্ট

মানিকগঞ্জের শিবালয় থানায় কন্যাকে ধর্ষণ চেস্টার বিচার চাইতে গিয়ে পুলিশের হাতে এক পিতা নির্যাতনের ঘটনায় ওসি মোঃ শাহীনকে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিষয়টি সোমবার রাতে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান সমকালকে জানান, পুলিশ বাহীনির কোন সদস্য অপরাধ করলে তার দায় পুলিশ বাহীনির নয়। পুলিশের যে সদস্য অপরাধ করেছেন তার দায় ওই সদস্যকেই নিতে হবে। মানিকগঞ্জের শিবালয় থানায় শনিবার সন্ধ্যায় কন্যাকে ধর্ষণ চেস্টার বিচার চাইতে গিয়ে পুলিশের হাতে এক পিতা নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় রাতেই অভিযুক্ত এএসআই আরিফ হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্তি করা হয়েছে। থানার ভিতরে বিচার প্রার্থী নির্যাতনের ঘটনায় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান সোমবার এক আদেশে শিবালয় থানার ওসি মোঃ শাহীনকে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রত্যাহার করে মাদারিপুর জেলায় সংযুক্তি করেছেন। এছাড়া ওসি মো ঃ শাহীন বিরুদ্ধে অভিয্গো গুলো তদন্ত করছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অপু মোহন্ত । শিবালয় থানার ওসি মোঃ শাহীন জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তিনি থানায় ছিলেন না। এসময় এএসআই আরিফ হোসেন একজনকে থানার ভিতরে মারধর করেন। এই ঘটনায় তাকে সোমবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ থেকে মাদারিপুর জেলায় বদলি করা হয়েছে। তিনি সোমবার সন্ধ্যার পর শিবালয় থানার ওসি (তদন্ত ) শেখ ফরিদ আহমেদের কাছে তার দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়েছেন। অপর দিকে ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু মোহন্ত বলেন, শিবালয় থানায় পুলিশ সদস্যের হাতে একজন মারধরের ঘটনায় তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিদের্শে বিষয়টি তদন্ত করছেন। সোমবার থেকে চলা তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানিকগঞ্জ পুলিশের উদ্ধর্তন এক কর্মকর্তা জানান , শিবালয়ের থানার ভিতরে একজন পুলিশ সদস্য কর্তৃক মারধরের ঘটনায় মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়ার কারণে পুলিশের ইমেজ কিছুটা হলেও ক্ষুন্ন হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এএসআই ঘটনাটি ঘটালেও থানার ওসি হিসেবে মোঃ শাহীন কোন ভাবেই তার দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। ওসি মোঃ শাহীন চলতি বছর ২ ফেব্রæয়ারি তারিখে শিবালয় থানায় যোগাদান করেন। ওসিকে শাস্তি মূলক ভাবে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে মারদারিপুর জেলায় সংযুক্তি করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার সময় থানায় কে কে উপস্থিত ছিলেন তাদের ভূমিকাও কি ছিলো সব বিষয় তদন্ত করা হয়েছে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে। উল্লেখ্য যে শনিবার সন্ধ্যায় শিবালয় থানায় কন্যা শিশু ধর্ষনের চেস্টা অভিযোগ দিতে গিয়ে এএসআই আরিফ হোসেন ওই ব্যক্তিকে থানার ভিতরে পিটিয়ে আহত করেন। ভুক্তভোগী ওই শিশুর বাবা জানান, স্ত্রীসহ তিনি ঢাকায় থাকেন। তার ৫ বছরের শিশু কন্যা থাকেন দাদীর কাছে। গত ২০ জুলাই শিবালয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মোঃ মান্নান খানের চাচাতো ভাই রজ্জব খান তার মেয়েকে ধর্ষণের চেস্টা করে। বিষয়টি হাতে নাতে ধরে ফেলে শিশুটির দাদী। পরে স্থানীয় সমাজপ্রতিদের জানানো হলেও, প্রভাবশালী হওয়ায় কারণে তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছিলেন না। উল্টো তাকেই নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হতো। এর পর গত ১৪ আগষ্ট শিবালয় থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও থানা থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে মা ও শিশু কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যান তিনি। এসময় থানার ওসি রুমে ছিলেন না। এএসআই আরিফ হোসেনের কাছে ঘটনা খুলে বলার পর তাকে থানার ভিতর মারধরে করা হয়। রাতে পুলিশ সুপারের কাছে বিচার দিলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবালয় সার্কেলে নূরজাহান লাবনীর নির্দেশে থানায় মামলা রেকর্ড হয়। ওই রাতেই অভিযুক্ত এএসআই আরিফ হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *