মো.রকিবুল হাসান বিশ্বাস, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)থেকে:
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মানিকগঞ্জের সিংগাইরের ৮ম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু। পরিবারের পক্ষ থেকে ক্যান্টেরমেন্ট থানায় ডাক্তারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের । নিহত ছাত্র মোঃ সাজ্জাদ হোসেন শুভ(১৪) উপজেলার চারিগ্রাম ইউনিয়নের মধ্যে চারিগ্রামের মোঃ শাহজাহানের ছেলে।
দীর্ঘ ১১ দিন আইসিইউতে থাকার পর শুক্রবার (২৬ আগস্ট) শুভোর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল কতৃপক্ষ। নিহতের পরিবার জানায়, শুভোর জ্বর ও মাথা ব্যাথা হলে গত ১৫ আগস্ট সাভারস্থ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী প্রফেসর ডাক্তার জাকিরুল ইসলামকে দেখান। তিনি এমআরআই এবং আরও কিছু টেস্ট দেন এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়ে চিকিৎসাপত্র লিখে দেন।
পরবর্তীতে ডাক্তারের দেয়া সব টেস্ট করিয়ে ওইদিনই রাত ৯-১০ টার দিকে রোগীকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করান । ডাক্তার জাকিরুল ইসলামের প্রদত্ত চিকিৎসাপত্র অনুযায়ী শুভ শারীরিক ভাবে প্রায় ৯০ ভাগ সুস্থ ও ভালো বোধ করছিলো। ১৬ আগস্ট দুপুরের দিকে চিকিৎসাপত্রে ডাঃ জাকিরুল ইসলামের লিখে দেয়া Vancomycin এর পরিবর্তে নাম না জানা কোন এক ডাক্তার Vecuronium Bromide BP ইঞ্জেকশন রোগীর শরীরে পুস করান। এতে রোগী সাথে সাথেই লুটিয়ে পড়ে। এসময় রোগীর চাচা ৯৯৯ ফোন দেয় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ আসে। পুলিশ আসার ফলে ডাক্তাররা রোগীকে আইসিইউতে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার জানান ভুল ইঞ্জেকশন এর কারনে রোগির হার্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। সিপিআর ম্যাসিনের মাধ্যমে হার্ট চালু করা হয়েছে এবং ফুসফুসে কৃত্রিমভাবে শ্বাস প্রশ্বাস দেয়া হচ্ছে। রোগী লাইফ সাপোর্ট এ কোমায় আছে।
অবশেষে দীর্ঘ ১১ দিন পর ২৬ আগস্ট রোগীর মৃত্যু নিশ্চিত করে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা মোঃ শাহজাহান জানান, আমার উপস্থিতিতেই ইঞ্জেকশন দেয়ার সময় আমার ছেলে লুটিয়ে পড়ে। এ অবস্থা দেখে সাথে সাথে আমার কাছ থেকে ডাক্তার, নার্স ও আনসার মিলে যাবতীয় চিকিৎসাপত্র জোড় পূর্বক ছিনিয়ে নেয়। আমি সেগুলো দিতে না চাইলে আনসারগণ আমাকে আঘাতও করে কিন্তু ইঞ্জেকশনের কভার টা নিতে পারেনি। আমার ছেলে নিহতের ঘটনায় ঢাকা ক্যান্টেরমেন্ট থানায় ডাক্তারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি । আমি আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তি চাই।