সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)প্রতিনিধি:

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার দক্ষিণ চারিগ্রাম কালিগঙ্গা নদী ভাঙ্গন এলাকা থেকে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ নামে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু । আর এই বালু বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন চারিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান মো. রিপন হোসেন। এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওই ইউনিয়নের মেম্বাররা। শনিবার (১২ নভেম্বর) তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে অবৈধ মাটি ব্যবসা বন্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র শরনাপন্ন হন তারা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এর আগে অন্য একটি গ্রুপ প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গৃহিত আশ্রয়ন প্রকল্প ভরাটের নামে ওই নদী থেকে বালু উত্তোলন করে অন্যত্র বিক্রি করে। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসলে তা বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) থেকে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ভাঙ্গন প্রবণ এলাকা থেকে ড্রেজার ও বলগেট বসিয়ে শুরু হয় বালু উত্তোলন। আর এ বালু দেদারসে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা।
সরেজমিন শনিবার (১২ নভেম্বর) দেখা যায়, দক্ষিণ চারিগ্রাম ও বরাটিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় বলগেট লাগিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। ক্যামেরায় ছবি তুলতে গেলে এগিয়ে আসেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন । তিনি জানান, ইউএনও স্যার চেয়ারম্যানকে বালু কাটার দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী দুই দিনের মধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পে মাটি ভরাটের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে, তার অদূরে বরাটিয়া বাজারের পশ্চিম পাশে স্থানীয় ইস্রাফিল, পাপলু ও খোরশেদ গং বালু উত্তোলন করে পাইপের মাধ্যমে অন্যত্র জমা করছেন। তাদের এ বালু উত্তোলনের ছবি তুলতে গেলে তারা বাঁধা দেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে বলেন আমরা অন্য জায়গা থেকে বালু ক্রয় করে ব্যবসা করছি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত ছয়দিন ধরে বালু উত্তোলন করলেও আশ্রয়ন প্রকল্পে মাত্র ১ দিন সামান্য কিছু বালু ফেলা হয়েছে। বাকি ৫ দিনের উত্তোলন করা বালু ট্রলার ও ট্রলিযোগে অন্যত্র বিক্রি করা হচ্ছে।
চারিগ্রাম ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল হালিম বলেন, সামান্য কিছু বালু আশ্রয়ন প্রকল্পে ফেলে বাকী প্রায় ৩০ বলগেট বালু রাতের আধাঁরে অন্যত্র বিক্রি করা হয়েছে। আমরা সকল মেম্বার মিলে উপজেলা চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে বিষটি ইউএনও স‍্যারকে জানিয়েছি।
দক্ষিণ চারিগ্রামের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট রকিব-উল হাসান জানান, বিধি মোতাবেক নদী ভাঙ্গন এলাকা ছাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পে বালু ভরাট করলে সমস্যা নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় ভাঙ্গনরোধে জিও ব্যাগ ফেলানো জায়গার আশপাশ থেকেই এ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
চারিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান মো. রিপন বলেন, এর আগে নদী থেকে মাটি উত্তোলন করে আশ্রয়ন প্রকল্পে ভরাটের সময় অনিয়ম হওয়ায় প্রশাসন বন্ধ করে দেন। ডিসি স্যারের অনুমতি নিয়ে ইউএনও স্যার আমাকে মাটি ভরাটের দায়িত্ব দিয়েছেন। অন্যত্রে মাটি বিক্রির কথা অস্বীকার করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ ইউপি চেয়ারম্যানকে ৩ দিন আগে মাটি ভরাটের দায়িত্ব দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সরকারি বরাদ্দ আমরা এখনো পাইনি। নদী ভাঙ্গন এলাকার আশপাশ থেকে মাটি কাটতে নিষেধ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *