মো রকিবুল হাসান বিশ্বাস,সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)প্রতিনিধি:

পাশের বাড়ি চলছিল দেবরের ছেলের বৌভাতের অনুষ্ঠান। এরই মধ্যে কখন যেন কে বা কারা চাচিকে খুন করে ঘরে লাশ তালাবদ্ধ করে রেখে গেছে কেউ বলতে পারছেন না। সন্ধ্যায় ছেলে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরে ঘরের তালা খুলে মায়ের নিথর রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। পাশেই রাখা ছিল হত্যায় ব্যবহৃত সেলিং ফ্যানের বডি।
রবিরার ( ২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের কাঞ্চননগর গ্রাম থেকে সাফিয়া আক্তার লক্ষীর (৫৮) লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত সাফিয়া আক্তার লক্ষী ওই গ্রামের মৃত. দরবেশ আলীর স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী।
পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট শেষে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। লাশের সুরতহালকারী তদন্তকর্মকর্তা এসআই রিজওয়ান জানান, সিলিং ফ্যানের বডি দিয়ে আঘাত করায় সাফিয়া ঘটনাস্থলেই মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মাথার ডান কানের উপরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
নিহতের ছোট ছেলে তরিকুল ইসলাম সোনাই বলেন, আমার কর্মস্থল সাভারের জোড়পুলের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে বাড়ি ফিরে আমার মাকে খোঁজতে থাকি। কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরের তালা খুলে দেখি উত্তর পাশের তার রুমে রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে। আমার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। তরিকুল অভিযোগ করে বলেন, পাশের বাড়ির আছর উদ্দিনের পুত্র সাঈদ, বিল্লাল ও প্রবাসি রফিকুলদের সাথে বসত বাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মামলা চলে আসছে। ওই জমির ওপর উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তারা আমাদের উচ্ছেদের চেষ্টা করছে। এদেও কেউ পরিকল্পিতভাবে আমার মাকে হত্যা করেছে বলেও তিনি জানান। তবে অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে, খুন হওয়া সাফিয়ার বড় ছেলে রতন মানসিক ভারসাম্যহীন। মাঝে-মধ্যেই মায়ের সাথে তার ঝগড়া হত। তবে মা ও ছেলের ঝগড়ায় এক পর্যায়ে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলেই স্থানীয় অনেকের ধারণা ।
নিহতের ননদ মালেকা আক্তার বলেন, আমার ছোট ভাই কুদ্দুছের ছেলে বাদশাহ মোল্লার বৌভাতের অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। ওই বাড়িতে দুইবার গিয়ে দেখি ঘর তালাবদ্ধ। পরে সন্ধ্যায় ভাতিজা সোনাইয়ের চিৎকারে এগিয়ে গিয়ে ঘরের ভিতর রক্তাক্ত ভাবীর লাশ দেখতে পাই।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ছেলে তরিকুল ইসলাম সোনাই বাদী হয়ে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে হত্যার অভিযোগ এনে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরিবারে বইছে শোকের মাতম। জড়িত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি মোঃ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, মামলার প্রস্তুতি চলছে। খুনের ঘটনায় থানায় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *