মো.রকিবুল হাসান বিশ্বাস,সিংগাইর(মানিকগঞ্জ)প্রতিনিধি:
গত ৫ আগস্ট সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগের পর সারা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতি বিরাজমান। চলছে সব জায়গায় ডাকাত আতঙ্ক। এরই মধ্যে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ডাকাত সন্দেহে মো. ফাহাদ হোসেন (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রকে আটক করে মারপিট করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছেন এলাকাবাসী। এর আগে জোরপূর্বক ওই ছাত্রের হাতে খেলনা পিস্তল দিয়ে ডাকাত প্রমাণের চেষ্টা করা হয়। আটক ফাহাদ হোসেন উপজেলার চারিগ্রাম ইউনিয়নের চারিগ্রাম বাজার সংলগ্ন উত্তর পাশের বাসিন্দা মো. আসামুদ্দিনের ছেলে ও চারিগ্রাম এস এ খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র।
রবিবার ১১ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে দাশেরহাটী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে এ ঘটনা ঘটে। সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্র ফাহাদ হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মো. সাদ্দাম হোসেন, মো. সাগর, মো. ইকবাল হোসেন ও মো.পারভেজসহ ১০-১২ জন বন্ধু তাকে মোবাইলে ডেকে রাত ৯ টার দিকে আওয়ামীলীগ সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান দেওয়ান মো. রিপন হোসেনের (দাশেরহাটি গ্রাম) বাড়ির পাশে ঘুরতে নিয়ে যায়।
এ সময় স্থানীয়রা ডাকাত সন্দেহে তাদের ধাওয়া করে। এতে ভয়ে অন্যান্যরা দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ফাহাদ পাশের পুকুরে পড়ে যায়। পরে উত্তেজিত জনতা তাকে আটকের পর বেদরক মারধরের করে রক্তাক্ত অবস্থায় আটকে রাখে। এ সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যায়,স্থানীয় কয়েকজন যুবক পাশের জঙ্গলে পড়ে থাকা একটি পিস্তল জোরপূর্বক ফাহাদের হাতে ধরিয়ে ছবি তুলে তাকে ডাকাত প্রমাণের চেষ্টা করছেন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফাহাদের চাচাতো ভাই মো.নয়া মিয়া বলেন, এলাকাবাসী সবাই জানে আমার চাচাতো ভাই ফাহাদ অত্যন্ত ভালো এবং নম্র ভদ্র ছেলে । যাদের ডাকে সে ঘটনাস্থলে এসেছে ওই গ্রুপের ছেলেরা খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক। তাদের ডাকে এসেই আমার ভাইয়ের কপালে এই অবস্থা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আমার নির্দোষ ভাইয়ের মারধরের বিচার চাই।
চারিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান মো.রিপন হোসেনের বলেন, এই গ্রুপটিই ইউনিয়ন পরিষদ ও আমার ব্যক্তিগত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ভাংচুর করে। এরাই গতরাতে আমার বাড়িতে হামলা করতে আসলে স্থানীয়রা ডাকাত সন্দেহ আটক করে তাদের সেনাবাহিনীর সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কন্ট্রোল রুমের নাম্বারে যোগাযোগ করলে নাম না বলার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, ডাকাত আটকের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি এটা কোন ডাকাতির ঘটনা নয়। সন্দেহজনকভাবে তাকে আটক করে মারধর করেছে। রাতেই তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় গণ্যমান্যদের মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাদেরই জিম্মাই দেয়া হয়। এ সময় উদ্ধারকৃত পিস্তলটি খেলনা পিস্তল বলেও জানান তিনি।
সিংগাইর থানার ওসি মোঃ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি বা জানাইও নাই । আপনার মাধ্যেমে বিষয়টি জানতে পারলাম। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।