রাকিবুল বিশ্বাস,সিংগাইর থেকেঃ২৭ অক্টোবর
নকশা-পর্চায় খাল থাকলেও নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ব্যাক্তি নামে বন্দোবস্ত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে হয়েছে। আর সেই জমিতেই নির্মাণ করা হচ্ছে একাধিক স্থাপনাসহ বহুতল ভবন । এ দৃশ্যমান ঘটনা মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের মুন্সিনগর মৌজায়। স্থানীয় জনৈক বাবুল হোসেন বিষয়টি তুলে ধরে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে আদালতে মামলাসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।ভুক্তভোগিরা এখনো কোন ফল পায়নি । এতে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিন বুধবার(২৬ অক্টোবর) দুপুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,রামনগর বাজার সংলগ্ন মুন্সিনগর মৌজায় ১৩৬ নং দাগে নকশায় দৃশ্যায়িত রয়েছে খাল। ওই খালকে নাল দেখিয়ে ১৯৮৭ সালে আইনুদ্দিন চৌকিদার ও খালেক চৌকিদারের নামে ৯০ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত দেন সরকার। ওই জায়গায় খালেক চৌকিদারের ৫০ শতাংশের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ না করলেও আইনুদ্দিন চৌকিদারের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশানগণ ৪০ শতাংশ জমিতে খাল ভরাটের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
সম্প্রতি আইনুদ্দিনের অংশে মেয়ে সখিনা ও চাম্পা, ছেলে আমজাদ মাটি ভরাট করে দোকানপাট নির্মাণ সম্পন্ন করেছেন। অপরদিকে, নাতি কাউছারের পাঁচতলা ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের সামনে ব্যাংক-বীমা ভাড়ার জন্য সাঁটানো হয়েছে ব্যানার। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের চোখের সামনে শ্রেনীভুক্ত খালের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূমি সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খালের বন্দোবস্ত দেয়ার সময় সরকারি আইন মানা হয়নি। তারপরও আইনকে বৃদ্দাঙ্গঁলী দেখিয়ে স্থাপনা নির্মাণ কোনোভাবেই বোধগম্য নয়। এখানে একই সাথে দুটি কাজই নিয়ম বর্হিভূত । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, রামনগর-মধুরচর রাস্তার পাশ ঘেঁষে এটা “আন্দুখালি” খাল নামে পরিচিত। এ খালটি একসময় প্রবাহমান ছিল। এটা ভরাট হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। তারা খালটি পুনরুদ্ধারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অভিযোগকারী বাবুল হোসেন বলেন, আমি এ বিষয়ে আদালতে মামলাসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ও কোনো ফল পাচ্ছি না। আমার বাড়িতে ঢোকার রাস্তাটি পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় আছেন বলেও জানান। মৃত আইনুদ্দিন চৌকিদারের মেয়ে সখিনা ও নাতি কাউছার খাল ভরাটের কথা স্বীকার করে বলেন, বন্দোবস্ত নেয়ার পর আমরা একবার খাজনা দিয়েছি । কিন্তু নামজারী-জমাভাগ করতে পারিনি। ওয়ারিশানগণ বন্টন করে স্থাপনা নির্মাণ করছি।
জামির্ত্তা ইউনিয়ন উপ-সহকারি (ভূমি) কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, জায়গাটি ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত । স্থাপনা নির্মাণের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন তিনি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করারও অনুরোধ করেন ওই ভূমি কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ বলেন, বিষয়টি আমি অবগত। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।