সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ

জমি সংক্রান্ত বিরোধে পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশের উপস্থিতিতে বিষপানে মারা গেছেন পুত্র মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু (৩৫) । শনিবার (২৫ মার্চ) বিকেল ৪ টার দিকে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার মানিকনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে সোমবার (২৭ মার্চ) সকাল ১১ টার দিকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রবিউল আলম উজ্জল ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বিষয়টি মিমাংসা হয়। স্থানীয় লোকজন ও নিহতের স্ত্রীর পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, লোকমান হোসেন তার পুত্রবধু রোজিনাকে সুযোগ পেলেই যৌন হয়রানির চেষ্টা করতো।

এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। মঞ্জু স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যত্র ভাড়া বাসায় থাকতেন। পরবর্তীতে বিষয়টি জমি সংক্রান্ত বিরোধে গড়ায়। লোকমানের বসতবাড়ির ২২ শতাংশ জমি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে হাত বদলের পর সর্বশেষ দলিল মুলে মঞ্জু মালিক হন। ওই জমি নিজের নামে ফিরিয়ে নিতে পিতা লোকমান পারিবারিক চাপের পাশাপাশি স্থানীয় শান্তিপুর-বাঘুলি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ করেন। যার প্রেক্ষিতে পুলিশ বিভিন্ন সময় ওই জমি তার পিতাকে ফিরিয়ে দিতে মঞ্জুকে চাপ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (২৫ মার্চ) এএসআই শাহীন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে মঞ্জু ও তার স্ত্রীকে গাল-মন্দ করে গ্রেফতারের হুমকি দেন। এতে মঞ্জু লজ্জা অপমান সহ্য করতে না পেরে পুলিশ ও পরিবারের লোকজনের সামনে বিষ পান করে । মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এরপর এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং সর্বশেষ ঢাকাস্থ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এদিকে, লোকমান হোসেন ছেলের চিকিৎসার খোঁজ খবর না নিয়ে পুত্রবধু রোজিনার বিরুদ্ধে ছেলের আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে থানায় অভিযোগ নিয়ে যান তিনি। একই সময় পুত্রবধুও তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন। পরে স্থানীয়ভাবে আপোস-মিমাংসার শর্তে তারা থানা থেকে চলে যায় বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে প্রকাশ। সোমবার (২৭ মার্চ) সকালে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সুরাহা হয় বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নিহত মঞ্জুর পিতা লোকমান হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

শান্তিপুর (বাঘুলি) তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই মো. শাহীনুর ইসলাম ঘটনার সময় তার উপস্থিতির কথা অস্বীকার করে তিনি তার কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে বলেন। সিংগাইর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিঃ রবিউল আলম উজ্জল বলেন, শান্তির লক্ষ্যে স্থানীয়ভাবে বসে নিহতের স্ত্রী রোজিনার জিনিসগুলো বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, নিহতের বাবা অপমৃত্যুর মামলার অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। সেটা ভূল থাকায় পরে সংশোধন করে দিয়ে গেছেন। পুলিশের উপস্থিতিতে বিষপানের কথা অস্বীকার করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *