
মো.রকিবুল হাসান বিশ্বাস,সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)থেকে:
মানিকগঞ্জেরর সিংগাইরে বীরনিবাস নির্মাণে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে টাকা দাবীর অভিযোগ পাওয়া গেছে শ্রমিকলীগ নেতা নাজিমুল ইসলাম জামালের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত জামাল সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের পারিল রফিকনগর গ্রামের মৃত ধলুর ছেলে। সে উপজেলা শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক ও মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য কন্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের উকিল মেয়ের জামাই বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি স্বপরিবারে পৌরসভার আঙ্গারিয়া মহল্লায় বসবাস করছেন।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ধল্লা ইউনিয়নের বাস্তা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ভুক্তভোগী মো. সফর উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জামাল ও তার আরেক সহযোগী আমানত হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে প্রকাশ, তার নামে সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া বীরনিবাস ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজের শুরুতে মালামাল পরিবহণ ও মাটি ভরাটের জন্য তাকে চাপ দিয়ে ৬০ হাজার টাকা খরচ করায় জামাল। এরপর ৫ মাস কাজ বন্ধ রেখে নতুন করে কাজ শুরু করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সফর উদ্দিনের কাছে ২ গাড়ি ইটের মূল্য বাবদ ৮০ হাজার টাকা দাবী করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নির্মাণ কাজ হবে না বলে জানান।
ওই মুক্তিযোদ্ধা ক্ষোভের সাথে বলেন,ঘর নির্মাণ শেষ না হওয়ায় অসুস্থ স্ত্রী নিয়ে অন্যের ঘরে বসবাস করছি। সরেজমিন কথা হয় একই গ্রামের ভুক্তভোগী আরেক মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের সাথে। তিনি অভিযোগ করে বলেন,জামাল আমাকে দিয়ে ২৫ হাজার টাকার বালু ভরাট করিয়েছে। সেই সাথে ঘর নির্মাণ কাজের জন্য ইট দাবী করে। ইট না দেয়ায় ২-৩ নম্বর ইট দিয়ে কাজ করে জামাল। আমি অভিযোগ করলে পিআইও এবং ইঞ্জিনিয়ার এসে সত্যতা পায়। সেগুলো পরিবর্তন করে দেয়ার কথা বললেও তারপর থেকে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে, গাজিন্দা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ ২৫ হাজার ও আলাউদ্দিনকে ৩০ হাজার টাকা বালু ভরাট ও পরিবহণের জন্য খরচ করতে হয়েছে।
জায়গীর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন নান্নু অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত কাজ বন্ধ রাখায় আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম। বিল না পাওয়ার অজুহাতে ঘর নির্মাণে গত রমজান মাস থেকে তালবাহানা শুরু করেছে জামাল।
অভিযুক্ত মো. নাজিমুল ইসলাম জামাল বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট,মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সরকারি বিধি মোতাবেক কাজ হচ্ছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আহাদী হোসেন বলেন, বীর নিবাস নির্মাণে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার নিয়ম নেই। মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের ঘর নির্মানে কিছু নিম্ন মানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। সেগুলো পরিবর্তন করে দিতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বীর নিবাস নির্মাণে বালু ভরাট ও পরিবহণ খরচের অজুহাতে টাকা পয়সা নেয়ার সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার মিটিং করে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান ।