মো.রকিবুল হাসান বিশ্বাস,সিংগাইর(মানিকগঞ্জ)থেকে :২৬ মে

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহরে ধলেশ্বরীর শাখা নদীর ওপর ( চান্দহর কোল ) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মাণাধীন সেতুর ১২০ টন ওজনের পিসি গার্ডার ভেঙে গেছে । এর পর থেকে কাজের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন আসছে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে। পল্লী সড়কের গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পে মানিকনগর জিসি- ইটাভারা আরঅ্যান্ডএইচ ভায়া আনন্দ বাজার সড়কে ২০০ মিটার চেইনেজে চান্দহর নদীর ওপর ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি ৩১৫ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রীজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি । ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে চুক্তির মেয়াদ দু’ দফা বাড়িয়ে কাজ শেষ করার কথা ২০২১ সালের ৩০ জুন । নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান তেমন কোনো কাজ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান । এরপর সেতুর কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েন নদী পারের মানুষেরা । পরবর্তীতে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চুক্তি বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর । নতুন করে কাজ পায় ফরিদপুরের জান্নাত কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান । এতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় সাড়ে ৩৪ কোটি টাকা । কার্যাদেশ মোতাবেক ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে কাজ সমাপ্তির তারিখ নির্ধারণ করে দেয়া হয় ।
সরেজমিন রোববার ( ২৬ মে) জানা যায়, ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৪৫ মিটার দৈর্ঘ্য ৪ নং পিসি গার্ডারটি নির্মাণাধীন অবস্থাতেই মাঝখান থেকে ভেঙে দু’ ভাগ হয়ে গেছে । নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান,আগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এজায়গাতেই কংক্রিট মিক্সিং করতো । এখন অন্য জায়গা থেকে যন্ত্রপাতি এনে রেডিমিক্স ব্যবহার করা হচ্ছে । এছাড়া কাজ ও চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে । তারা আরো বলেন, এতো বড় একটা ব্রীজের কাজের দায়িত্ব কিভাবে এলজিইডি অফিসের সার্ভেয়ার আব্দুল মালেক ও ইলেক্ট্রিশিয়ান মোয়াজ্জেম হোসেনকে দেয়া হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়।
ফরিদপুর জান্নাত কনস্ট্রাকশন লি: ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার সাজেদুল ইসলাম বলেন, একটি গার্ডার তৈরীতে এক মাস সময় লাগে এবং ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়। আমাদের ৪ নং গার্ডারটি স্ট্রেচিং করার সময় ভেঙে গেছে । এটা একটা দুর্ঘটনা ।
দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্ভেয়ার আব্দুল মালেক বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং ফর্মুলা অনুযায়ী পিসি গার্ডারটিকে ৮০% চাপ দেয়া হয়েছিল তারপরও ভেঙ্গে গেছে। এটা একটা দুর্ঘটনা।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, গত ঈদের সময় আমরা ঢালাইয়ের কাজ করেছিলাম। সম্ভবত কিউরিং সমস্যার কারণে এমনটা হয়েছে। এর সম্পূর্ন দায়-দায়িত্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *