জ. ই. আকাশ :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে আ. লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিশ্ব বরেণ্য ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগমের মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ৬টি স্থানে নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের তিনটি ইউনিয়ন আজিমনগর, সুতালড়ী, লেছড়াগঞ্জ ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নসহ ৬টি স্থানে নির্বাচনী জনসভা করেন মমতাজ বেগম।
এ সব জনসভায় দেশ বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে একনজর দেখতে হাজার হাজার নারী পুরুষের ঢল নামে। প্রতিটি জনসভায় শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুণে। এ দিন সকালে প্রথমেই আজিমনগর চরাঞ্চলে পদ্মা পাড়ে মমতাজ বেগম উপস্থিত হলেই শতশত মানুষ তাকে বিশালাকৃতির নৌকা উপহার দিয়ে বরণ করে নেন।
জনসভায় মমতাজ বেগম বলেন, অনেক টাকা পয়সা নিয়ে এসে দলীয় গুটি কয়েকজন নেতাকর্মী কিনে দলের বিরোধীতা করে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন। সাধারণ মানুষেই বলে, ওই টাকা নিয়ে আইছে একটা সাইনবোর্ড কিনব। উনার বউয়ের নাকি খুব শখ এমপি সাইনবোর্ড লাগানোর। সে জন্য নাকি এমপি সাইনবোর্ড লাগব। আমরা আজ ১৫ বছর ধরে উন্নয়নমূলক কাজ করছি। এই চরাঞ্চলে আজ রাস্তাঘাট, কালভার্ট ব্রীজ, দুটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহুতল ভবন। চরে আজ হয় নাই কী? প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তদন্ত কেন্দ্র নির্মাণ, শতভাগ বিদ্যুতও আছে এই চরাঞ্চলে। তারপরেও এখানকার আমাদের দলীয় নেতাকর্মীরা এখনও চরাঞ্চলের জন্য অনেক দাবি আমার কাছে করে। কলেজ করতে হবে, হাসপাতাল করতে হবে। আবার নাকি বালুর বস্তাও ফেলতে হবে। চরাঞ্চলে এবার নদী ভাঙন রোধেও কাজ করা হয়েছে। তিনমাস আগে শুধুমাত্র চর রক্ষায় সাড়ে চার কোটি টাকার ওপরে জিও ব্যাগের কাজ করেছি।তিনি আরও বলেন, আমার দলে নেতারা যখনই কোনো কাজের জন্য দাবি করতে থাকে আর আমার তখনই দৌঁড়াদৌঁড়ি লেগে যায়। একবার এ মন্ত্রণালয়ে, আবার ও মন্ত্রণালয়ে। তারপরেও আমি আপনাদের সেবায় আপনাদের পাশে আছি। আগেও ছিলাম এখনও আছি, ভবিষ্যতেও থাকব। তই আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ, আপনাদের ভোটটা কিন্তু নৌকা মার্কায় দিতে হবে। আমি জানি টাকা দিয়ে কোনো দিন মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। ভালোবাসা পেতে হলে কাজ দিয়ে পেতে হয়। সেবা দিয়ে পেতে হয়। আপনাদের আমি ভালোবাসি বলেই নিরলসভাবে আপনাদের সেবা করে যাচ্ছি। যতদিন বাঁচবো আপনাদের সেবা করেই বাঁচতে চাই, ইনশাআল্লাহ।
মমতাজ বেগম বলেন, আজ যিনি আপনাদের বড় বড় আশা দেখাইতেছে, টাকা ছড়াইতেছে। তাঁর তো শেখ হাসিনাকে চিনতেই পাঁচ বছর কেটে যাবে। সে আবার কাজ আনবো কীভাবে? আমার আবার একটা সুবিধা আছে। আমার চেহারাটা পরিচিত তো, কোনো জায়গা আটকায় না। যে মন্ত্রণালয়েই যাই, যে দাবিই করি, তা আর মিস হয় না। তাই আপনাদের ওপর আমার আস্থা আছে। বিশ্বাস আছে। পাঁচ শো/এক হাজার টাকার কাছে আপনারা বিক্রি হবেন না। তাই আপনাদের উন্নয়নের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। অন্যরা যতই বলুক, আমরাও তো আওয়ামী লীগ করি। নৌকা ব্যতিত কোনো আওয়ামী লীগ নেতার দাম নেই জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এটা আপনাদের বুঝতে হবে। একটা কথা মনে রাখবেন, নৌকার এমপি বানালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে আর দেশের উন্নয়নও অব্যাহত থাকবে। কারণ শেখ হাসিনার মার্কা নৌকা, আমার মার্কাও কিন্তু নৌকা।চরাঞ্চল শেষে রাতে উপজেলার বাহিরচর ও মানিকনগর বাজারের জনসভায়ও তিনি যোগদান করেন।
এ সময় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।