জ,ই আকাশ, হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ, প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ধূলশুড়া ইউনিয়নে টানা দুই রাতে ১৫ বাড়িতে সিদ কেটে চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। গত ২০ ও ২১ অক্টোবর ধূলশুরা ইউনিয়নের ৩টি গ্রামের ১৫ বাড়িতে এ চুরির ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়,গত ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আইলকুন্ডি গ্রামের মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন (৪৪) এর বাড়ি হতে ২৮ হাজার টাকা মূল্যের ১টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১৭১৫ টাকা, মো. মোকবুল হোসেনের বাড়ি হতে ২ ভরি ওজনের একটি রুপার নুপুর, যার বাজার মূল্য ১৫০০ টাকা ও ১৫০০ টাকা মূল্যের ১ টি মোবাইল, মো. হাশেম এর বাড়ি হতে ২০ হাজার টাকা মূল্যের ১টি মোবাইল, রামেশ্বরপুর গ্রামের জিতেন চন্দ্র মন্ডলের বাড়ি হতে ১২হাজার টাকা মূল্যের ১টি মোবাইল, মো. বাচ্চু শেখ ও মো:সিহাব হোসেনের বাড়িতে সিদ কাটলেও কোনো মালামাল নিতে পারেনি।
এছাড়াও পরের দিনই ২১ অক্টোবর শুক্রবার মধ্যরাতে একই ইউনিয়নের গঙ্গারামপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি হতে ১২ হাজার টাকা মূল্যের ১টি মোবাইল, লুঙ্গী শাড়ী, মোহনপুর গ্রামের মো রুমি হোসেনের বাড়ি হতে ১৮হাজার টাকা মূল্যের ১ টি মোবাইল ও নগদ ২৫ হাজার টাকা, মো: খালেকের বাড়ি হতে ১টি স্বণের চেইন যার বাজার মূল্য ৫০ হাজার টাকা, ১টি মোবাইল, যার মূল্য এক হাজার টাকা। গঙ্গারামপুর গ্রামের মো: হুমায়ন হোসেনের বাড়ি হতে ১০ ভরি ওজনের রুপা, যার বাজার মূল্য ১৫ হাজার টাকা ও নগদ এক হাজার টাকা ও ৬শ টাকা মূল্যের ১ টি শাড়ী, মো. মোতালেব শেখ এর বাড়ি হতে ৬শ টাকা মূল্যের ১টি শাড়ী, মো করিম খান (৫৫) এর বাড়ি হতে ২৯ হাজার টাকা মূল্যের ২টি মোবাইল চুরি হয়। এ ঘটনায় এলাকায় জনমনে বেশ আতংকর সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য এ ঘটনায় ১২টি বাড়ির চুরির তথ্য মিললেও বাকি ৩ টি বাড়ির তথ্য পাওয়া যায়নি।
গঙ্গারামপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ধুলসুরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজিদ মাহমুদ রবিন বলেন, “আমার প্রতিবেশী খালেক চাচার ঘরের সিদ কেটে চোর স্বর্ণের চেইন ছিড়ে নিয়ে গেছে। এছাড়া আরো কয়েকটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে।”
গঙ্গারামপুর গ্রামের ভুক্তভোগী খালেক মিয়ার স্ত্রী বলেন, “শুক্রবার ভোররাত পৌনে চারটার দিকে চোর সিদ কেটে ঘরে ঢুকে পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের আমার গলার চেইন ছিড়ে নিয়ে যায়। থানায় অভিযোগ না দেয়া প্রশঙ্গে বলেন, ভয় হয় বলে থানায় অভিযোগ দেইনি। যদি চোরেরা আবার ক্ষতি করে। আবার কেউ কেউ দাবি করে বলেন, থানায় অভিযোগ দিলে যে টাকার চেইন চুরি হইছে তার চেয়ে বেশি টাকা খরচ লাগতে পারে বলেও ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে অভিযোগ দেইনি।”
এ ব্যাপারে ধূলশুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জায়েদ খান মুঠোফোনে ফোনে জানান, “দুই রাতে ১৫টি বাড়িতে চুরির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আগে কখনো এধরনের ঘটনা আমার ইউনিয়নে ঘটেনি। এর সাথে কারা জড়িত তা শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনার পর গতকাল রাত থেকে গ্রাম পুলিশসহ আমি নিজেই রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছি।”
হরিরামপুর থানা ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, “এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে ধুলশুড়া ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে মোবাইল, জামাকাপড়, লুঙ্গি চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরির ধরণ শুনে সিচকে চোর মনে হয়েছে। এঘটনা শোনার সাথে সাথেই ওই এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় টহল বাড়িয়েছি। চোর ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”
হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান জানান, “হরিরামপুরে সাম্প্রতিক সময়ে চুরির ঘটনা বেড়েছে। শুনেছি এ পর্যন্ত পুরো উপজেলায় অর্ধ শতাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। দুইদিন আগে ধূলশুরা ইউনিয়নে পরপর ২ দিনে ১৫ চুরি হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং এ জোরালোভাবে তুলে ধরবো। তবে পুলিশের তৎপরতা আরও বাড়ানো জরুরি।”