
জ. ই. আকাশ, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে পাটকাঠি বোঝাই ট্রলারে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ১ দিন অতিবাহিত হলেও এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি। লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়ার পরেও পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগি ট্রলারের মাঝি ও শ্রমিকরা। তারা অভিযোগ করে বলেন, থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দিলেও এখনো মামলা নেয়নি পুলিশ। এমনকি তারা গতকাল ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে দুইবার জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। আজ বৃহস্পতিবার ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে চাইলেও পুলিশ এখনো মামলা নেয়ার ব্যপারে পরিমাণ কর্ণপাত করেনি।
অগ্নিকান্ডের ঘটনার শিকার নৌকার মাঝি আক্কাস বলেন, “আমরা গতকাল রাতে মামলা করার জন্য থানায় গেলেও থানা থেকে মামলা নেয়নি। আজ আবার বিকেলে লিখিতভাবে অভিযোগ দিলেও পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে তদন্তের পর মামলা নেওয়া হবে।”
আগুনে পুড়ে যাওয়া পাঠকাঠির মালিকের ছেলে সামসুল হক বলেন, “গতকাল আমরা রাত ১২টা পর্যন্ত থানায় ছিলাম। আমরা মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করছেন। আমাদেরকে বলেছেন থানার কম্পিউটার নষ্ট। কালকে আসেন। এ ছাড়াও আমি দুইবার ৯৯৯-এ ফোন দেওয়ার পরেও কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেছে বলে থানা থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমাদের বিভিন্ন কথাবার্তা বলে মামলা না নিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আজ সন্ধায় আমরা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে চাইলেও এসআই আমির হামজা দুইজন আসামীর নাম বাদ দিতে বলেছেন।”
ট্রলারের শ্রমিক কালাম বলেন, “মামলা না নিয়ে গতকাল রাতে ওসি স্যার আমাদেরকে বলেছেন, তোমাদের ট্রলারে তোমরাই আগুন দিয়েছো। তোমরা আগুন দিয়ে মিথ্যা কথা বলছো। তাহলে ওসি স্যার তো চাঁদাবাজদেরই পক্ষ নিলো। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
ট্রলারে থাকা পাটখড়ির অপর মালিক ইউনুস বলেন, “এসআই আমির হামজা প্রথমে চারজনের এবং পরবর্তীতে দুইজনের নাম বাদ দিতে বলেছেন।”
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মিজানুর ইসলাম বলেন, “অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তের পর মামলা নেয়া হবে।”
অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আমির হামজা মুঠোফোনে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বলেন, প্রাথমিক তদন্ত চলছে। আমি এখন তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে আছি।” তবে আসামীদের নাম বাদ দেয়ার কথাটি সঠিক নয় বলেও তিনি দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত সকালে উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকায় পদ্মা নদী দিয়ে পাটকাঠি বোঝাই ট্রলারে চাঁদা না পেয়ে ট্রলারে আগুন ধরিয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজনসহ ফায়ার সার্ভিসের একটি ঘটনা স্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।