হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি  :

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের চালা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রায়হান মোল্লার বিরুদ্ধে এলজিএসপি-৩ কর্মসূচি প্রকল্পের সদস্য সচিব ৪, ৫, ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক ইউপি সদস্য ছালমা বেগমের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত ২৪ এপ্রিল মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদ্য সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য ছালমা বেগম।

লিখিত অভিযোগে ছালমা বেগম উল্লেখ করেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরে এলজিএসপি-৩ কর্মসূচির আওতায় উপজেলার চালা ইউনিয়নের ইজদিয়া গ্রামের আক্কাছ পীরের বাড়ির সামনে পুকুরের ঘাটলা নির্মাণ কাজের আমি সদস্য সচিব ছিলাম। উক্ত প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর আমি খোজ নিয়ে জানতে পারি, আমাকে না জানিয়ে এবং আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রকল্পের সমস্ত টাকা উত্তোলন করেন প্রকল্পের সভাপতি ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রায়হান মোল্লা।

অভিযোগের সূত্র ধরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৭ সদস্য বিশিষ্ট প্রকল্পের ওয়ার্ড কমিটির সভার কার্য বিবরণীতে সভাপতি রায়হান মোল্লা ও সদস্য সমাজসেবক মোঃ রাজ্জাক মোল্লা এই ২ জনের স্বাক্ষর ব্যতিত অন্য ৫ জনের কেউ স্বাক্ষর করেছে বা বিযয়টি তারা জানে এমন তথ্যের হদিস মেলেনি। কয়েকজন এ প্রতিবেদককে জানান, অনেকেই এই কমিটিতে স্বাক্ষর করেননি। এমনকি বিষয়টি তারা জানেনও না।

এ ব্যাপারে প্রকল্পের সভাপতি ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রায়হান মোল্লা মুঠোফোনে জানান, স্বাক্ষর ছালমা বেগমেই করছে। এখন মিথ্যা বলছে। আপনি সরাসরি দেখা করেন, বিস্তারিত বলব।

চালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আব্দুল মজিদ জানান, “প্রকল্পের ব্যাপারে সাবেক সদস্য ছালমা বেগম আমার কাছে আগেই অভিযোগ দিয়েছিলেন যে, প্রকল্প নিয়ে রায়হানের সাথে ঝামেলা চলছে। আমি এতটুকু জানি যে, প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়ন থেকে শুরু করে ওয়ার্ড কমিটির সভার কার্যবিবরণীসহ কোথাও ছালমা বেগম স্বাক্ষর করেনি। এই প্রকল্পটি আমার সময়ের না। তবে বিল হয়েছে আমার সময়ে। রায়হানকে চেকে স্বাক্ষরের সময় আমি বলেছিলাম, এটা নিয়ে কিন্তু ছালমা বেগমের অভিযোগ আছে। তবে কাজটি আমার সময়ের না বলে আমি তেমন কিছু বলিনি। তবে প্রকল্পের কাগজপত্রে স্বাক্ষরগুলো ছালমা বেগমের না, এটা সত্য।”

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, “স্বাক্ষর জালিয়াতির একটা অভিযোগ পেয়েছি। এখন তো ঈদের ছুটির সময় হয়ে গেলো। ছুটি শেষ করে এসে আমি ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে আগে দেখব ঘাটলা সঠিকভাবে করা হয়েছে কিনা? কাজটা কেমন হয়েছে এটা নির্ণয় করব আগে। তারপর সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য ছালমা বেগম যে অভিযোগ করেছেন, তা তদন্ত সাপেক্ষে এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

উল্লেখ্য, ২০২০-২১ অর্থ বছরে এলজিএসপি-৩ কর্মসূচির আওতায় উপজেলার চালা ইউনিয়নের ইজদিয়া গ্রামের আক্কাছ পীরের বাড়ির সামনে পুকুরের ঘাটলা নির্মাণ কাজের দরপত্রে ২,৬২,০৬০/- টাকায় সর্বনিম্ন দরপত্রে কাজটি পান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স দত্ত এন্টারপ্রাইজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *